আমরা সবাই উইন্ডোজ ব্যবহারে অভ্যস্ত তাই হঠাত করে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহার শুরু করে আমাদের যে জায়গায় সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পরতে হয় সেটা হল লিনাক্সের ফাইল সিস্টেম বা হায়ার্রকি। উইন্ডোজে কোন ফোল্ডার বা ফাইল কোথায় আছে সেটা আমরা সহজে বের করতে পারলেও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে এসে আমরা বিপাকে পরি। এর মূল কারণ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের ফাইল হায়ারার্কি মানে কোন ফাইল কোথায় আছে সেটা উইন্ডোজের মতো না, উইন্ডোজ থেকে সামান্য আলাদা। তবে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের ফাইল হায়ারার্কি কঠিন কিছুনা, শুধু লিনাক্স ডিরেক্টরি স্ট্রাকচার সম্পর্কে জানতে হবে।
লিনাক্স এবং উইন্ডোজ ডিরেক্টরি গঠন:-
ইনস্টলেশন পরবর্তী অন্যান্য যে কোন কাজ করার পূর্বে আমাদের উচিত প্রথমেই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের ডিরেক্টরী স্ট্রাকচার সম্পর্কে ভালো করে জানা। অন্যান্য ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেমের মতো উবুন্টু লিনাক্স ও রেড হ্যাট লিনাক্সেও Hierarchical (HFS) ফাইল সিস্টেম আছে। লিনাক্স ফাইল সিস্টেমের সর্বোচ্চ ডিরেক্ট্ররী হলো ফরওয়ার্ড স্ল্যাশ
(/) অর্থাৎ রুট ডিরেক্ট্ররী। এই রুট (/) ডিরেক্ট্ররীর ভিতরেই সমস্ত সাব ডিরেক্ট্ররী এবং ফাইল সমূহ থাকে। আমরা এখানে রেডহ্যাট লিনাক্সের ডিরেক্টরি স্ট্রাকচার সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করার চেষ্টা করব। এই লেখাটাতে রেডহ্যাট লিনাক্সের ডিরেক্টরি স্ট্রাকচার সম্পর্কে লেখা হয়লেও লেখাটি প্রায় সব লিনাক্স ডিরেক্টরি স্ট্রাকচারের জন্যই প্রযোজ্য। লিনাক্স ডিস্টিবিউট্র ভেদে একটা-দুটো ফাইল হয়তো আলাদা থাকতে পারে, বাদবাকী সব একই থাকবে।
রুট (/)ডিরেক্টরী
লিনাক্স ফাইল সিস্টেমের সর্বোচ্চ ডিরেক্টরী হলো ফরওয়ার্ড
স্ল্যাশ (/) অর্থাৎ রুট ডিরেক্টরী। এই রুট (/) ডিরেক্ট্ররীর ভিতরেই সমস্ত সাব ডিরেক্টরী
এবং ফাইল সমূহ থাকে। Single-user-mode এ আপারেট
করার জন্য যে সকল ফাইল প্রয়োজন হয় তা সবই এই (/) ডিরেক্টরীর ভিতরে থাকে। এছাড়াও
সিস্টেমকে শাটডাউন, রিপেয়ার, রিকভার করতে করতে যে সমস্ত ফাইলের প্রয়োজন হয় তা এই
ডিরেক্টরীর মধ্যে থাকে।


/root
root ডিরেক্টরী হলো রুট ইউজার বা সুপারইউজার এর হোম ডিরেক্টরি। হোম ডিরেক্টরী। লিনাক্সে একজন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ইউজার থাকে। এই ইউজার এই কম্পিউটারের যেকোন রকম পরিবর্তন করতে সক্ষম। অর্থাৎ এই কম্পিউটার ধ্বংস করার ক্ষমতাও তার হাতে।এ সমস্ত ফোল্ডারগুলো যে রুট (/) এর অধীনে আছে সেই রুট (/) এর হোম ডিরেক্টরি হচ্ছে রুট (/root), কারণ যার যার হোম ডিরেক্টরি তার তার নামে তৈরী হয়। যেমন আপনার নাম যদি হয় “ছোঁয়া’’ তবে আপনার হোম ডিরেক্টরি “ছোঁয়া” নামেই তৈরী হবে এবং তা থাকবে হোম (/home) ফোল্ডার এর অধীনে। কিন্তু রুট (/) এর হোম ডিরেক্টরি হোম ফোল্ডার এর অধীনে নেই কারণ সে সুপারইউজার।
/home
home ডিরেক্টরীটি
হল ইউজারদের হোম ডিরেক্টরী। লিনাক্স সিস্টেমে যখন কোন নতুন
ইউজার তৈরি হয় তখন সেই ইউজারের নামে একটি নতুন ডিরেক্টরী বা ফোল্ডার /home এর মধ্যে
তৈরি হয়। এটাই হচ্ছে ইউজারদের নিজস্ব এলাকা, এখানে একজন ইউজার
কিছু লিখে ফাইলে সংরক্ষণ করতে পারেন। আপনি চাইলে আপনার লিনাক্সক
সিস্টেমকে এমনভাবে কনফিগার করতে পারবেন যে একজন ইউজার আর একজন ইউজার এর হোম ডিরেক্টরির
ফাইল দেখা তো দূরের কথা এর মধ্যে কি কি ফাইল আছে তা জানতে পারবে না।
/bin
bin ডিরেক্টরীর মধ্যে সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও সাধারণ ইউজার দ্বারা ব্যবহৃত কমান্ড (যেমন- ls, pwd, cp, rm, cal, cat ইত্যাদি) সব কমান্ডের প্রোগ্রাম ফাইল সমূহ থাকে। সাধারণত এই ডিরেক্টরীর ভিতর কোন সাবডিরেক্টরী থাকে না। এরকম আরেকটি ডিরেক্টরি হচ্ছে /usr/bin. এই ডিরেক্টরিতেও সিস্টেমের ইউজারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম গুলো জমা থাকে।
/sbin
লিনাক্সের বেশির ভাগ সিস্টেম এ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রোগ্রামগুলো
এখানে জমা রাখা হয়। অনেকক্ষেত্রে আপনাকে রুট ইউজার হিসেবে এই
প্রোগ্রামগুলো চালাতে হবে। এরকম আরেকটি ডিরেক্টরি হচ্ছে (/usr/sbin).
/lib
lib ডিরেক্টরীর মধ্যে কার্নেল মডিউল এর যাবতীয় ফাইল থাকে, এবং এই ডিরেক্টরীর মধ্যে এমন কিছু ফাইল আছে যা বিভিন্ন প্রোগ্রাম শেয়ার করে থাকে, এই ফাইল গুলোকে শেয়ারড ফাইলও বলা হয়। এই ফাইলগুলো অনেকটা উইন্ডোজ এর dll file এর মত।
/etc
লিনাক্স সিস্টেম এর মূল কনফিগারেশন ফাইলগুলো থাকে এই
ফোল্ডারে। এই ফাইলগুলোর সব গুলোই টেক্সট ফাইল এবং হাতে লিখে
অনেক কিছু পরিবর্তন করা যায়। প্রায় সব ধরনের কনফিগারেশন ফাইল এই ডিরেক্টরীতে থাকে।
/lost+found
lost + found ডিরেক্টরীর মধ্যে সব ধরনের বাতিল ফাইল বা ডাম্প ফাইল থাকে।
/media
media ডিরেক্টরীর মধ্যে অস্থায়ী ফাইল সিস্টেম যেমন সিডিরম মাউন্ট হয়ে থাকে। তবে এর বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি চাইলে এখানে করতে পারেন বা অন্য কোথাও করতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছে।
/mnt
mnt ডিরেক্টরীর মধ্যে অস্থায়ী ফাইল সিস্টেম যেমন কোন
নেটওয়ার্ক ড্রাইভ কিংবা পেন ড্রাইভ মাউন্ট করা হয়ে থাকে।
/var
var ডিরেক্টরীর মধ্যে সিস্টেমের সকল লগ ফাইল, প্রিন্টার সম্পর্কিত ফাইল, ক্যাশ ফাইল, ইউজার ফাইল ইত্যাদি।
var ডিরেক্টরীর মধ্যে সিস্টেমের সকল লগ ফাইল, প্রিন্টার সম্পর্কিত ফাইল, ক্যাশ ফাইল, ইউজার ফাইল ইত্যাদি।
/usr
লিনাক্স সিস্টেমের মধ্যে যে সকল প্রোগ্রাম ইনস্টল করা হয় সেগুলোর সাধারণত usr ডিরেক্টরীতে জমা হয়। তাই এই ডিরেক্টরীকে ডকুমেন্টশেন ডিরেক্টরী বলা হয়।
লিনাক্স সিস্টেমের মধ্যে যে সকল প্রোগ্রাম ইনস্টল করা হয় সেগুলোর সাধারণত usr ডিরেক্টরীতে জমা হয়। তাই এই ডিরেক্টরীকে ডকুমেন্টশেন ডিরেক্টরী বলা হয়।
/tmp
tmp ডিরেক্টরীর মধ্যে সকল প্রকার টেম্পরারী ফাইল বা ক্যাশ ফাইল জমা থাকে।
/srv
এ ফোল্ডারটি হচ্ছে ওয়েব সার্ভারের জন্য। অনেকটা /var/www যে কাজ করে এটা।
এ ফোল্ডারটি হচ্ছে ওয়েব সার্ভারের জন্য। অনেকটা /var/www যে কাজ করে এটা।
/sys
নামেই বোঝা যাচ্ছে এটা সিস্টেম ফোল্ডার।
নামেই বোঝা যাচ্ছে এটা সিস্টেম ফোল্ডার।
/dev
dev
ডিরেক্টরীর মধ্যে সব ধরনের
ডিভাইস ফাইল থাকে। মনে রাখবেন লিনাক্স সমস্ত ডিভাইসগুলোকে
ফাইল আকারে রাখে এবং আপনি এগুলো অন্য সব ফাইল এর মতই পড়তে ও লিখতে পারবেন।
যেমন: /dev/fd0 হচ্ছে আপনার প্রথম ফ্লপি ড্রাইভ,
/dev/cdrom হচ্ছে প্রথম সিডি রম,
/dev/hda হচ্ছে প্রথম হার্ডডিস্ক বা প্রাইমারি হার্ডডিস্ক।
এ কারণে এই /dev ডিরেক্টরির ভেতর হাজার রকমের ফাইল দেখতে পাবেন।
যেমন: /dev/fd0 হচ্ছে আপনার প্রথম ফ্লপি ড্রাইভ,
/dev/cdrom হচ্ছে প্রথম সিডি রম,
/dev/hda হচ্ছে প্রথম হার্ডডিস্ক বা প্রাইমারি হার্ডডিস্ক।
এ কারণে এই /dev ডিরেক্টরির ভেতর হাজার রকমের ফাইল দেখতে পাবেন।
/boot
boot ডিরেক্টরীর মধ্যে
কার্নেল এবং বুট ফাইল থাকে।এখানে থাকে কম্পিউটার কীভাবে লিনাক্সকে বুট করবে
সে সম্পর্কিত ফাইল/ফোল্ডার।
/cdrom
এখানে আপনার সিডি/ডিভিডি ড্রাইভে প্রবেশ করানো ডিস্কটির সমস্ত ফাইলে এ্যাক্সেস করতে পারবেন।
এখানে আপনার সিডি/ডিভিডি ড্রাইভে প্রবেশ করানো ডিস্কটির সমস্ত ফাইলে এ্যাক্সেস করতে পারবেন।
/opt
এখানে অনেক ইনস্টলার প্রোগ্রাম ইনস্টল করে।
এখানে অনেক ইনস্টলার প্রোগ্রাম ইনস্টল করে।
/proc
proc ডিরেক্টরীটি হল লিনাক্সের ভার্চুয়াল ফাইল সিস্টেম যা সচল কার্নেলে ব্যবহৃত বিভিন্ন হার্ডওয়্যার (মেমরী, সিপিউ, স্টোরেজ ডিভাইস ইত্যাদি), নেটওয়ার্ক ও সফটওয়্যার এর স্ট্যাটাস রীপোর্ট করে।
পরবর্তী পোষ্টে লিনাক্সের সাব ডিরেক্টরী সমূহের
বর্ণনা করা হবে।
=============********************==================
=============********************==================
0 comments Blogger 0 Facebook
Post a Comment
Thank you for your comments.
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.