মার্ক শাটলওর্থ ইউনিভার্সিটি অফ কেপটাউন থেকে
ব্যবসায় ডিগ্রি লাভ করে, তার বাবা ছিলেন একজন সার্জন আর মা ছিলেন স্কুল টিচার।
মার্ক শাটলওর্থ পড়াশুনা করা অবস্থায় বেশ কয়েকটি কম্পানিতে লিনাক্স সার্ভার
ইনস্টল করে, এবং সেই কম্পানিগুলোর ওয়েবসাইট দেখাশুনা করে কিছু রোজগার করত। ২০০৪
সালের কিছু আগে মহাকাশ অভিযানের পর লিনাক্সকে ডেস্কটপের দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেবার
জন্য ইংল্যান্ডে ক্যানোনিকাল নামে এক কম্পানি খুলে বসে মার্ক শাটলওর্থ ।
সেই সময় এটা কেবল হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না।
কারন এতদিনে অনেক কম্পানিই চেষ্টা করেছে
ডেস্কটপের জন্য লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে। কিন্তু অপারেটিং
সিস্টেম তৈরি করতে পারলেও সেটাকে সেই অর্থে জনপ্রিয় করে তুলতে এখনি কেউ পারেনি। তাই
মার্ক শাটলওর্থ ২০০৪ সালে তার কম্পানিতে লোক নিয়োগের জন্য
ডেবিয়ানের (আরেকটি লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম) ছয় মাসের মেইলিং লিস্টের আর্কাইভ সাথে নিয়ে
এন্টার্টিকা বেড়াতে যায়। সেখান এক আইসব্রেকার জাহাজে বসে সেই লিস্ট থেকে বেছে
বেছে সে উপযুক্ত লোক নির্বাচন করে। পরে তাদের নিয়ে ক্যানোনিকালের পক্ষ থেকে
উবুন্টু নামে এক নতুন অপারেটিং সিস্টেম তৈরির কাজে নেমে যায়। উবুন্টু প্রজেক্ট
শুরু করার সময়ই স্বিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে উবুন্টু অপারেটিং সিস্টেমটি প্রতি
ছয় মাস পরপর আপডেট করা হবে। সেই লক্ষ্যে ২০০৪ সালের অক্টোবরে উবুন্টুর প্রথম
ভার্সন মুক্তি দেয়ার তারিখ ঠিক করা হয় এবং নাম ঠিক করা হয় উবুন্টু ৪.১০। উবুন্টুর ভার্সনগুলোর নামে
মুক্তির সাল আর মুক্তির মাস দেয়া থাকে।
যেমন উবুন্টু ৪.১০ ভার্সনে ৪ মানে হল ২০০৪ সাল আর ১০ মানে হল অক্টোবর মাস। জন্ম নিল উবুন্টু। উবুন্টুর
স্লোগান হচ্ছে “Linux
for Human Beings”। অনুবাদ করলে দাঁড়াচ্ছে “সবার জন্য লিনাক্স”।
উবুন্টুর সংস্করণ সমূহ :-
(সূত্রঃ উইকিপিডিয়া) প্রতিবছর উবুন্টুর দুটি
করে সংস্করণ প্রকাশিত হয় এবং প্রকাশের বছর এবং মাস এর উপর ভিত্তি করে এর সংস্করণ
নম্বর নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। উদাহারণ স্বরূপ উবুন্টুর প্রথম সংস্করণনের কথা বলা
যেতে পারে। এই সংস্করণটি ছিল উবুন্টু ৪.১০ যেটি ২০ অক্টোবর, ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল উবুন্টু সংস্করণ সমূহের একটি বিকল্প কোড
নাম দেয়া হয়। একটি বিশেষন এবং একটি প্রাণীর নামের সমন্বয়ে এটি তৈরি করা হয়
(উদাহারণ: ইন্ট্রাপিড আইবেক্স, কারমিক কোয়ালা ইত্যাদি)।
কোন নাম সমূহ ইংরেজি বর্ণমালার ক্রম অনুযায়ি নির্ধারণ করা হয়। তবে উবুন্টুর
প্রথম তিনটি সংস্করণ এর ব্যাতিক্রম ছিল। বর্ণক্রমিক হওয়ায় নতুন সংস্করণসমূহ
সহজেই চিহ্নিত করা যায়। সাধারণ ভাবে উবুন্টুর বিভিন্ন সংস্করণ বুঝাতে কোড নামের
বিশেষণ অংশটি ব্যবহৃত হয়।
উবুন্টুর সর্বশেষ সংস্করণ হল ১৪.০৪ ট্রাস্টি থার
(এলটিএস),
প্রকাশিত হয়েছে ১৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে।
![]() |
উবুন্টুর সংস্করণ সমূহ |
“উবুন্টু”
হল একটি দক্ষিন আফ্রিকান শব্দ, যার অর্থ
হল “Humanity to others” বা “সবার জন্যই মানবতা”। অপারেটিং সিস্টেম উবুন্টুর লক্ষ্য হচ্ছে
মানুষ যাতে কম্পিউটারে বিনামূল্যে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারে। শুধু তাইনা, ওপেন সোর্সের মন্ত্রে উজ্জীবিত উবুন্টুও বিশ্বাস করে যে কমপিউটার
সফটওয়্যার কারো কুক্ষিগত হতে পারেনা, সবাই স্বাধীনভাবে
এটা ব্যবহার করার অধিকার রাখে। সেজন্য উবুন্টু ব্যবহার করতে কোন টাকা পয়সা দিতে
হয় না এবং এই বিনে পয়সার উবুন্টু ব্যবহার করা পুরোপুরি বৈধ।
উবুন্টুর লোগ বিশেষণ
:--
উবুন্টু লোগের আরাকটি নাম হচ্ছে ‘সার্কেল’
অর্থাৎ ফ্রেন্ড বা বাংলায় বন্ধুত্বের বৃত্ত। একটু গভীর ভাবে লক্ষ করলেই দেখা যাবে
যে উবুন্টুর এই লোগটিতে আসলে তিঞ্জন ভিন্ন বর্ণরে মানুষ হাতে হাত রেখে একটি বন্ধন
তৈরী করেছে। উবুন্টু যে মানবতার জয়গান গায় তারই আরেকটি প্রমান এই লোগ।
![]() |
উবুন্টুর লোগ |
0 comments Blogger 0 Facebook
Post a Comment
Thank you for your comments.
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.